শিশুকে যে ৭ খাবার খেতে দেবেন না

মুখরোচক খাবার না হলে শিশুরা খেতে চায় না। তাকে খাওয়ানোর জন্য বাইরের খাবার হয়তো দেন না, কিন্তু বাড়িতে যা তৈরি করে দেন তার সবই কি স্বাস্থ্যকর? তাকে আপনি ডুবো তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেতে দিচ্ছেন নিয়মিত। কিন্তু সোডিয়াম, চর্বি, চিনি এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরা খাবার সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন? জেনে নিন শিশুর জন্য অস্বাস্থ্যকর কিছু খাবার সম্পর্কে-

 

ফ্রুট স্ন্যাকস: দীর্ঘকাল ধরে, খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবসায়ীরা অপুষ্টিকর পণ্য বিক্রি করার জন্য ‘ফল’ শব্দটি ব্যবহার করছেন। এর ফলে তারা সহজেই আপনাকে আকর্ষণ করতে পারছেন। ফ্রুট কেক বা ফ্রুট গাম মিছরির মতো চিনিতে ভরা। এগুলো খাওয়ার সময় শিশুদের দাঁতে লেগে থাকে যা কিছুদিনের মধ্যেই শিশুর দাঁতে গর্ত তৈরি করে।

প্রক্রিয়াজাত মাংস: একাধিক গবেষণা বলছে যে প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস, যেমন হট ডগ বা বোলোগনা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। হট ডগ সোডিয়াম, চর্বি এবং নাইট্রেট দ্বারা ভরা থাকে যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। গরুর মাংসের পরিবর্তে মুরগির মাংস খেতে দিন, সব সময় চেষ্টা করুন তাজা মাংস কেনার।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই: ডিপ ফ্রাই করা আলু যাকে আমরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নামে চিনি, এই খাবার দ্রুতই শিশুর পছন্দের খাবার হয়ে উঠেছে। অস্বাস্থ্যকর ট্রান্স ফ্যাট এবং অতিরিক্ত ক্যালোরিতে ভরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কোনো রকম উপকারই করে না। শিশুদের কাছে এগুলো এতটাই মজাদার মনে হয় যে তারা অন্য কোনো সবজিতে স্বাদ খুঁজে পায় না। শিশুর স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে তাকে আলু ডিপ ফ্রাই না করে বেক করে খাওয়ান। সাধারণ আলুর বদলে মিষ্টি আলু খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। এই আলুতে থাকে ফাইবার, ভিটামিন সি ও পটাসিয়াম।

 

কোমল পানীয়:এ ধরনের পানীয় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে এবং শিশুর জন্য এটি আরও বেশি সত্যি। সোডা বা কোলা পান করলে তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং স্থূল হয়ে যায়। ফলের জুসও সোডার মতোই খারাপ হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে যদি এগুলো শতভাগ তাজা ফল থেকে তৈরি না হয় তবে তাদের পুষ্টির মূল্য কোমল পানীয়ের মতোই কম। আপনার সন্তানের প্যাকেটজাত ফলের জুস খাওয়া সীমিত করুন এবং তাকে প্রচুর দুধ ও পানি পান করতে উৎসাহিত করুন।

 

মধু: শিশুর বয়স অন্তত এক বছর না হওয়া পর্যন্ত তাকে মধু খেতে দেবেন না। কারণ এতে স্পোর থাকতে পারে যা বোটুলিজমের কারণ হতে পারে। এই সমস্যার লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শুষ্ক মুখ, বমি, পক্ষাঘাত এবং শ্বাসকষ্ট। যেহেতু শিশুদের ইমিউন সিস্টেম তুলনামূলকভাবে দুর্বল, তাই তারা বোটুলিজমের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। এই কারণেই চিকিত্সকরা পরামর্শ দেন যে, মধু রয়েছে এমন খাবার শিশুর এক বছর হওয়ার আগে খেতে দেবেন না।

 

প্যাকেটজাত নুডলস: প্যাকেটজাত নুডলসে শুধুমাত্র পুষ্টি কম থাকে না, এগুলো প্রচুর সোডিয়ামে ভরা থাকে। দুই থেকে তিন বছরের শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ১,০০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম থাকা উচিত নয়। আট বছর বয়সী শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ১,২০০ মিলিগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। বেশিরভাগ প্যাক করা নুডলস বা পাস্তায় শিশুর প্রয়োজনীয় সোডিয়ামের অর্ধেকেরও বেশি থাকে।

 

পনির: যদিও পনির ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উত্স, তবে শিশুর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এক টুকরো পনিরে ১০০ ক্যালোরি এবং ১০ গ্রাম চর্বি থাকতে পারে, তাই নিয়মিত নাস্তায় এর থেকে বেশি খেলে সংখ্যাগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। দুগ্ধজাত খাবারের জন্য দৈনিক প্রস্তাবিত পরিমাণ হল ২-৩ বছর বয়সীদের জন্য দুই কাপ এবং ৪-৮ বছর বয়সীদের জন্য আড়াই কাপ। মাত্র দেড় আউন্স পনির সুপারিশকৃত দুগ্ধের এক কাপের সমতুল্য। ২-৩ বছর বয়স পর্যন্ত শিশকে পনির না খেতে দেওয়াই ভালো। সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে তারেক রহমানকে ট্রাম্পের আমন্ত্রণ

» ড. ইউনূসের ৫ মামলা বাতিলের রায়ে আইনি দুর্বলতা পায়নি আপিল বিভাগ

» রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত : সারজিস আলম

» চলচ্চিত্র শিল্পকে সমৃদ্ধ করতে সরকার সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে : নাহিদ ইসলাম

» গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে পাশের একটি দেশ অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করছে : এম সাখাওয়াত

» নারী দিবসকে সামনে রেখে আসছে ‘স্বপ্নজয়ী নারী সম্মাননা-সিজন টু’

» ইসলামপুরে এমএ সামাদ পারভেজ মেমোরিয়াল মহিলা ডিগ্রী কলেজ প্রতিষ্ঠাতার মৃত্যু বার্ষিকী উদযাপন

» দুর্দান্ত ব্যাটারি লাইফে নিশ্চিন্তে চার বছর, উন্মোচিত হল নতুন অনার এক্স৫বি প্লাস

» দেশের প্রথম ‘অনলাইন বাণিজ্য মেলা’ শুরু করলো রকমারি

» জুলাই ঘোষনাপত্রের পক্ষে লক্ষ্মীপুরে লিফলেট বিতরণ

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিশুকে যে ৭ খাবার খেতে দেবেন না

মুখরোচক খাবার না হলে শিশুরা খেতে চায় না। তাকে খাওয়ানোর জন্য বাইরের খাবার হয়তো দেন না, কিন্তু বাড়িতে যা তৈরি করে দেন তার সবই কি স্বাস্থ্যকর? তাকে আপনি ডুবো তেলে ভাজা খাবার, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেতে দিচ্ছেন নিয়মিত। কিন্তু সোডিয়াম, চর্বি, চিনি এবং অন্যান্য অস্বাস্থ্যকর উপাদানে ভরা খাবার সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন? জেনে নিন শিশুর জন্য অস্বাস্থ্যকর কিছু খাবার সম্পর্কে-

 

ফ্রুট স্ন্যাকস: দীর্ঘকাল ধরে, খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবসায়ীরা অপুষ্টিকর পণ্য বিক্রি করার জন্য ‘ফল’ শব্দটি ব্যবহার করছেন। এর ফলে তারা সহজেই আপনাকে আকর্ষণ করতে পারছেন। ফ্রুট কেক বা ফ্রুট গাম মিছরির মতো চিনিতে ভরা। এগুলো খাওয়ার সময় শিশুদের দাঁতে লেগে থাকে যা কিছুদিনের মধ্যেই শিশুর দাঁতে গর্ত তৈরি করে।

প্রক্রিয়াজাত মাংস: একাধিক গবেষণা বলছে যে প্রক্রিয়াজাত লাল মাংস, যেমন হট ডগ বা বোলোগনা ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। হট ডগ সোডিয়াম, চর্বি এবং নাইট্রেট দ্বারা ভরা থাকে যা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে। গরুর মাংসের পরিবর্তে মুরগির মাংস খেতে দিন, সব সময় চেষ্টা করুন তাজা মাংস কেনার।

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই: ডিপ ফ্রাই করা আলু যাকে আমরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নামে চিনি, এই খাবার দ্রুতই শিশুর পছন্দের খাবার হয়ে উঠেছে। অস্বাস্থ্যকর ট্রান্স ফ্যাট এবং অতিরিক্ত ক্যালোরিতে ভরা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কোনো রকম উপকারই করে না। শিশুদের কাছে এগুলো এতটাই মজাদার মনে হয় যে তারা অন্য কোনো সবজিতে স্বাদ খুঁজে পায় না। শিশুর স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে তাকে আলু ডিপ ফ্রাই না করে বেক করে খাওয়ান। সাধারণ আলুর বদলে মিষ্টি আলু খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। এই আলুতে থাকে ফাইবার, ভিটামিন সি ও পটাসিয়াম।

 

কোমল পানীয়:এ ধরনের পানীয় স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে এবং শিশুর জন্য এটি আরও বেশি সত্যি। সোডা বা কোলা পান করলে তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং স্থূল হয়ে যায়। ফলের জুসও সোডার মতোই খারাপ হতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে যদি এগুলো শতভাগ তাজা ফল থেকে তৈরি না হয় তবে তাদের পুষ্টির মূল্য কোমল পানীয়ের মতোই কম। আপনার সন্তানের প্যাকেটজাত ফলের জুস খাওয়া সীমিত করুন এবং তাকে প্রচুর দুধ ও পানি পান করতে উৎসাহিত করুন।

 

মধু: শিশুর বয়স অন্তত এক বছর না হওয়া পর্যন্ত তাকে মধু খেতে দেবেন না। কারণ এতে স্পোর থাকতে পারে যা বোটুলিজমের কারণ হতে পারে। এই সমস্যার লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শুষ্ক মুখ, বমি, পক্ষাঘাত এবং শ্বাসকষ্ট। যেহেতু শিশুদের ইমিউন সিস্টেম তুলনামূলকভাবে দুর্বল, তাই তারা বোটুলিজমের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকে। এই কারণেই চিকিত্সকরা পরামর্শ দেন যে, মধু রয়েছে এমন খাবার শিশুর এক বছর হওয়ার আগে খেতে দেবেন না।

 

প্যাকেটজাত নুডলস: প্যাকেটজাত নুডলসে শুধুমাত্র পুষ্টি কম থাকে না, এগুলো প্রচুর সোডিয়ামে ভরা থাকে। দুই থেকে তিন বছরের শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ১,০০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম থাকা উচিত নয়। আট বছর বয়সী শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ১,২০০ মিলিগ্রামের বেশি হওয়া উচিত নয়। বেশিরভাগ প্যাক করা নুডলস বা পাস্তায় শিশুর প্রয়োজনীয় সোডিয়ামের অর্ধেকেরও বেশি থাকে।

 

পনির: যদিও পনির ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনের একটি দুর্দান্ত উত্স, তবে শিশুর ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। এক টুকরো পনিরে ১০০ ক্যালোরি এবং ১০ গ্রাম চর্বি থাকতে পারে, তাই নিয়মিত নাস্তায় এর থেকে বেশি খেলে সংখ্যাগুলো দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। দুগ্ধজাত খাবারের জন্য দৈনিক প্রস্তাবিত পরিমাণ হল ২-৩ বছর বয়সীদের জন্য দুই কাপ এবং ৪-৮ বছর বয়সীদের জন্য আড়াই কাপ। মাত্র দেড় আউন্স পনির সুপারিশকৃত দুগ্ধের এক কাপের সমতুল্য। ২-৩ বছর বয়স পর্যন্ত শিশকে পনির না খেতে দেওয়াই ভালো। সূএ:ঢাকা পোস্ট ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com